
চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকশিত হলো আজ । ৫০০ - র মধ্যে ৪৯৮ পেয়ে উচ্চমাধ্যমিকে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন দিনহাটার অদিশা দেবশর্মা । ৪৯৭ পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন মেদিনীপুরের সায়নদীপ সামন্ত ।এই বছর ২ এপ্রিল শুরু হয়েছিল উচ্চ মাধ্যমিক। শেষ হয়েছিল ২৭ এপ্রিল। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৪৪ দিনের মাথায় অবশেষে ফলপ্রকাশ হলো উচ্চমাধ্যমিকের।পাশের হারে এগিয়ে সাত জেলা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, কালিম্পং , দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং বাঁকুড়া রয়েছে প্রথম সাতে । রেকর্ড গড়ে প্রথম দশে ২৭২ জন পরীক্ষার্থী।তাদের মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ১৪৪ জন। ১২৮ জন ছাত্রী। প্রথম হওয়া অদিশা দেবশর্মা কোচবিহারের দিনহাটা সোনিদেবী জৈন হাইস্কুলের ছাত্রী। দ্বিতীয় স্থানাধিকারী সায়নদীপ সামন্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের জলচক নটেশ্বরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। উচ্চমাধ্যমিকে প্রথম স্থানাধিকারী অদিসার স্বপ্ন ভবিষ্যতে পথ শিশুদের পাশে দাঁড়ানো।

উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন তা জানতে পেরে উচ্ছ্বসিত এবং কিছুটা বিস্মিত অদিশা । তাঁর বাড়িতে এখন উৎসবের মেজাজ। চলছে মিষ্টিমুখ এবং শুভেচ্ছা বিনিময়ের পালা। ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হতে চান অদিশা।তিনি বলছেন, ‘‘আমি মাধ্যমিকে ৬৭৮ পেয়েছিলাম। তার পর উচ্চ মাধ্যমিকে প্রিয় বিষয়গুলো নিয়ে পড়েছিলাম। বাবা-মা আমাকে প্রেরণা দিয়েছিলেন। তবে কেউ পড়াশোনা নিয়ে কখনও জোর খাটায়নি আমার উপর। অনলাইন ক্লাসের সময় স্কুলের শিক্ষকরাও আমাদের খুব সাহায্য করেছেন। আমি ভাল ফল করব, এই আত্মবিশ্বাস ছিল। তবে ভাবতে পারিনি এত ভাল ফল হবে "। এবছর উচ্চমাধ্যমিকে তৃতীয় হয়েছেন চার জন। রোহিত সেন, সোহন দাস, অভীক দাস এবং পরিচয় পারি। এঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৬।পাশের হারে প্রথম পূর্ব মেদিনীপুর । এ বার ছাত্রের তুলনায় ছাত্রীর সংখ্যা বেশি ।এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে পাশের হার ৮৮.৪৪ শতাংশ। ছেলেদের পাসের হার ৮০ শতাংশ। মেয়েদের পাসের হার ৮৬.৫৮ শতাংশ ।

উচ্চমাধ্যমিক পর্ষদের ওয়েবসাইট https://wbchse.nic.in/ -এ দেখা যাবে পরীক্ষার্থীদের ফল। ফল প্রকাশের পরে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় থেকে মার্কশিট ও সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হবে শিক্ষার্থীদের। যে শিক্ষার্থীদের রেজাল্টে সমস্যা থাকবে, তাদের উচ্চ শিক্ষা সংসদে যোগাযোগ করতে হবে। ফলের রিভিউ ও স্ক্রুটিনির জন্য আবেদন করা যাবে ২০ জুন থেকে। ২০ জুন থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত এবার রিভিউর জন্য আবেদন জানানো যাবে অনলাইনেই। পরীক্ষার্থীরা হাতে মার্কশিট পেলে ২০ তারিখ মধ্যরাত থেকে রিভিউর আবেদন জানাতে পারবেন। রিভিউ প্রক্রিয়ার জন্য পেনমেন্ট করতে এবার ইউপিআই, ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা যাবে।বিগত দিনে করোনা আবহে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে শিক্ষা ব্যবস্থার। ক্লাসরুম থেকে সরে এসে পঠনপাঠন আবদ্ধ হয়েছে ল্যাপটপ বা মোবাইলের স্ক্রিনে। অনলাইন পড়াশোনার চক্করে তাই কাটছাঁট হয়েছে সিলেবাসেও।

এবারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাও হয়েছে পুরোনো সিলেবাসের মাত্র ৭০ শতাংশ পাঠ্যক্রম মেনে। তবে আগামী বছর এই নিয়ম বদলাতে চলেছে বলে খবর।২০২১ সালে করোনার দ্বিতীয় স্রোতের সময় বোর্ডের পরীক্ষায় বহু রদবদল আসে। করোনার জেরে সিলেবাসে কিছুটা বদল আনা হয়। ২০২২ সালেও করোনা ভ্রূকুটি থাকায় পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে পরীক্ষা হয়নি । তবে এবার দুই বছর পুরোনো পূর্ণ সিলেবাসের উপর পরীক্ষা করানোর কথা ভাবছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। এই ভাবনা বাস্তবায়িত হলে ২০২৩ সালের পরীক্ষার পাঠ্যক্রমে পূর্ণ সিলেবাসই থাকতে পারে।তবে জানা গিয়েছে, এক্ষেত্রে কোভিড যদি ফের পঠনপাঠনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বা বর্তমান পরিস্থিতি ফের বদলে যেতে থাকে, তাহলে ফের নতুন করে ভাবনা চিন্তা শুরু করবে সংসদ।
Comments