পুলিসকে ইমেল করে আত্মঘাতী বাঁশদ্রোণীর যুগল। বাঁশদ্রোণীর ব্রহ্মপুরে যুগলের জোড়া দেহ উদ্ধারের ঘটনায় সামনে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় থানায় প্রথমে ইমেল করেন যুগল। ইমেল করে আত্মহত্যা করতে যাওয়ার কথা জানান। একইসঙ্গে পুলিসকে অনুরোধ করেন, তাঁদের আত্মহত্যা নিয়ে বেশি কিছু তদন্ত না করতে। কারণ, এর পিছনে কোনও রহস্য নেই। তাঁরা নিজেই যৌথভাবে এই আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই মেইল করেই আত্মঘাতী হন যুগল ঋষিকেশ পাল ও রিয়া সরকার।
ইমেইল রেকর্ড বলছে, স্থানীয় থানার একটি অফিশিয়াল আইডি-তে সকাল ৯টা বেজে ২ মিনিটে মেইল করেন যুগল। মেইল পেয়েই রুদ্ধশ্বাসে ছুটে বাঁশদ্রোণীর ব্রহ্মপুরের ওই বাড়িতে পৌঁছয় পুলিস। পুলিস যখন বাড়িতে পৌঁছয়, তখন ঘড়িতে ৯টা ২০। কিন্তু এই ১৮ মিনিটের মধ্যেই আত্মঘাতী হন যুগল। শহরের বুকে এভাবে পুলিসকে মেইল করে, দেহ দেওয়ার জন্য বন্ধুদের উইল করে রেখে, আত্মহত্যা করার ঘটনায় স্বাভাবকিভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
যে বন্ধুদের নামে ঋষিকেশ উইল করে গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যেই এক বন্ধু জানান, "একদিন ঋষিকেশ আমাকে বলে, আমাদের তো কেউ-ই নেই। আমরা যদি মারা যাই, তাহলে আমাদের বডিটা রাস্তাতেই পড়ে থাকবে। তোরা সৎকার করে দিবি তো! তখনই আমাদের উইল করে দেয়।" আরেক বন্ধু জানান,"ওরা খুব লাক্সারিভাবে থাকত। কেউ কোনওদিন বুঝতেও পারেনি যে ওরা আর্থিক দিক থেকে ভুগছিল। ওরা বাঁশদ্রোণীতেই ফ্ল্যাট কিনে থাকছিল। পরে সেটা বেচে ব্রহ্মপুরে ভাড়া থাকতে শুরু করে। দীঘাতেও আমরা ঘুরতে গিয়েছিলাম। আমি তো জানতাম ওরা স্বামী-স্ত্রী। এখন জানতে পারছি ওরা লিভ-ইন করত।"
অন্যদিকে এই ঘটনায় রিয়ার পিসি জানিয়েছেন, "২০২০ সালের ২৯ জনুয়ারি রিয়া বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। ওর বাবা মে মাসে মারা যায়। বাড়িতে ওর মা এবং বোন আছে। আমরা তাও মেনে নিয়েছিলাম। আমরা বলেছিলাম বিয়ে করতে। কিন্তু ছেলেটা রাজি হয়নি।রিয়া ওকে এতটাই ভালোবাসত যে, এর জন্য নিজের বাবা-মাকেও ছেড়ে দিয়ে চলে আসে। আমাদের সঙ্গেও কথা বলত না। ফেসবুক থেকেও ব্লক করে রেখেছিল। এদিন পুলিশ তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখে তাদের ঘরে চলছিল এসি। খাটের উপর দুজনে চাদর চাপা দিয়ে শুয়ে আছে । পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে মেডিসিনের বোতল। একই সঙ্গে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয়েছে। তাতে লেখা, "আমাদের বডি যেন বন্ধুদেরকে দিয়ে দেওয়া হয়।"
Comments