চলে গেলেন নবতিপর চিত্র পরচালক তরুণ মজুদার । গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ১৪ই জুন থেকে এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন পরিচালক। সেখানেই আজ সকাল ১১ টা ১৭ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি । মৃত্যু কলে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর । কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন তরুনবাবু । এসএসকেএমে ভর্তি থাকা কালীন তাঁকে দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশ কিছুদিন ধরে ডায়ালিসিস চলছিল তরুণবাবুর। বৃহস্পতিবার দু’ঘণ্টা মাত্র ডায়ালিসিস করা সম্ভব হয়েছিল। শুক্রবার চার ঘণ্টা পূর্ণ মাত্রায় ডায়ালিসিস হয়েছে তরুণবাবুর।
ক্রিয়েটিনিন ৬ থেকে কমে হয়ে গিয়েছিল ৩.৬। তাঁর গলার রক্তক্ষরণও শুরু হয়েছিল । ১৯৩১ সালের ৮ ই জানুয়ারি বাংলাদেশের বগুড়া জেলায় জন্ম তরুণ মজুদারের । বাংলা চলচ্চিত্র জগতের বিখ্যাত অভিনত্রী সন্ধ্যা রায়ের স্বামী ছিলেন পরিচালক তরুণ মজুমদার। তাঁর ইচ্ছা ছিলো দেহ দান করার। তাই তাঁর পরিবার তাঁর দেহদান করতে চান । 'শেষযাত্রায় অসংখ্য মানুষের ঢল চাই না', পরিবারকে বলে গেছেন তরুণ মজুমদার। কোনও বিরাট আয়োজনে নয়, নিঃশব্দেই ‘ভালোবাসার বাড়ি’ ছাড়তে চাওয়ার আবেদন রেখে গেছেন তরুণ মজুমদার, এমনটাই জানিয়েছেন পরিচালকের দীর্ঘদিনের বন্ধু কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর শেষকৃত্য নিয়ে এখনও বিস্তারিত তথ্য মেলেনি পরিবারের তরফে। রাজ্য সরকারের তরফে ইতিমধ্যেই এসএসকেএম হাসপাতালে পৌঁছেছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
তাঁরা চেয়েছিলেন তরুণ মজুমদারকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বিদায় জানাতে এবং নন্দনে দেহ রাখতে। কিন্তু তরুণ মজুমদার চাননি তাঁকে গান স্যালুট দিয়ে বা ফুল মালা দিয়ে বিদায় জানাক মানুষ। তাই তাঁর ইচ্ছামত তাঁর পরিবার তাঁর মরদেহ নিয়ে প্রথমে তাঁর বাসভবনে নিয়ে যাবেন এবং তারপর তাঁর মরদেহ এসএসকেএমেই ফিরিয়ে দেওয়া হবে । বাংলা সিনেমার দুনিয়ায় এই কিংবদন্তি পরিচালকের অবদান রয়েছে অনেকখানি। ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে পাঁচটি জাতীয় পুরস্কার। ‘বালিকা বধূ’, ‘কুহেলি’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘পলাতক’, ‘গণদেবতা’, ‘আলো’র মতো একের পর এক সুপারহিট সিনেমা তিনি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন। কিছু দিন আগেও এক তথ্যচিত্রের রেকির জন্য ঘুরে এসেছিলেন পুরুলিয়া। হাজির হয়েছিল অনীক দত্ত পরিচালিত ‘অপরাজিত’ দেখতেও।
Comments