মানুষ কি আদৌ মানবাধিকার পাচ্ছে!
প্রতিবেদন,তনুশ্রী গুহঃ মানবাধিকার হল এক বিস্তারিত বিষয়। যার সীমা অনেকদূর। মানবাধিকার এই অধিকার মানুষ জন্মগত ভাবেই গ্রহণের অধিকারী। কিন্তু প্রশ্ন চলেই আসে যে মানুষ কি আদৌ তার অধিকার সম্পর্কে ওয়াকিবহাল! এরকম অনেক মানুষই আছেন যারা আজও এবিষয়ে সচেতন নয় যে তাদের অধিকার ক্ষুন্ন হলে তারা কোথায় সেই অধিকার আদায়ের প্রশ্ন রাখবে! এটিই হলো এক চরম দুর্বিষহের বিষয়। বিভিন্ন আইন, প্রস্তাব আছে যা মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য প্রকাশিত। সেগুলি সম্পর্কে যদি মানুষ সচেতনই না থাকে তাহলে তার অধিকার সুরক্ষিত হবে কিভাবে? এটি সত্যি এক বড়ো প্রশ্ন এসেই যায়। এছাড়াও অনেক আইন আছে যা মানুষের ন্যায়ের জন্য প্রকাশিত কিন্তু আদৌ কি মানুষ সেই আইনের সুবিধা পায়? সবই আজ যেন এসব প্রশ্নের উত্তরের অপেক্ষায়। তবে এসব বিষয় নিয়ে যদি মানুষ আজ না ভাবে তাহলে আর কবে ভাববে! নিজের অধিকার সুরক্ষার জন্য নিজেকে লড়াই ত করতেই হবে। শুধু আইন থাকলেই হবেনা, সেই আইন মানুষের জন্য কতটা ফলপ্রসু হিসেবে কাজ করছে সেটাও দেখা একটি বড় বিষয়। সবাইকে এটি মনে রাখতে হবে যে "মানবাধিকার" মানুষের জন্মগত অধিকার এবং এটিই ভোগ করার অধিকার সবারই আছে।
বর্তমানে অনেক কিছুই প্রয়োজন। তবে যে কোনো সমাজকে সুষ্ঠ ভাবে চালাতে গেলে সবার আগে যা প্রয়োজন তা হল " আইনি সুরক্ষা"। আইন ত অনেক আছে, কিন্তু তা সর্বক্ষেত্রে কতোটা মানুষ আশাপ্রদ ভাবে পাচ্ছেন তা খতিয়ে দেখা এক বড়ো বিষয়। শুধু তাই নয় আইনের বিচারের ফল পাওয়া কতোটা সময়সাপেক্ষ তা খতিয়ে দেখাও কর্তব্য। মানুষ ন্যায়বিচারের জন্যই আইনের দ্বারস্থ হয়। সেটি মাথায় রেখেই আইনের বিচার হওয়া উচিত।
আরেকটি বিষয়, মানুষেরও কিন্তু সমাজের প্রতি অনেক কর্তব্য আছে এবং সেগুলি পালন করাও কিন্তু মানুষের উচিৎ। নাগরিক হিসেবে প্রতিটি নাগরিকেরই উচিৎ আইন-শৃঙ্খলা পালন করা, আইনের মর্যাদা রাখা, আইনের অপব্যবহার না করা। আইন তৈরি হয় মানুষের সুবিধার্থে। সেই আইন যেন মানুষকে সেই সুবিধা দিতে পারে সেটি যেমন একটি বিষয় ঠিক সেরকমই মানুষও যেন সেই আইনের মান রক্ষা করতে পারে সেটিও কিন্তু তার কর্তব্য। কর্তব্য ব্যাতিত সমাজ কখনোই সুষ্ঠু ভাবে এগোতে পারেনা।
যে আইনের দ্বারস্থ মানুষ হয়, সেই আইনের প্রতি মানুষের কিছু আশা থাকে। অনেকসময় অনেকে ন্যায়বিচার পায়না এবং পেলেও তা হয়ে যায় দীর্ঘ সময়সাপেক্ষ। তখন ধীরে ধীরে আইনের প্রতি মানুষের বিশ্বাস উঠে যায়। তাহলে এই বিষয়গুলো কি কখনো সুষ্ঠু সমাজ গড়তে সাহায্য করবে??
খুবই বড়ো প্রশ্ন আজ এগুলি! কিন্তু এর উত্তরও এই প্রশ্নগুলোর মধ্যেই বিদ্যমান। আইনের বিচার সর্বদা ন্যায়ের প্রতি থাকা দরকার। এবং মানুষকেও ওয়াকিবহাল হতে হবে তার নিজের অধিকার, সুরক্ষা ও আইনি ব্যাবস্থা সম্পর্কে।
আরেকটি বিষয় যেটা না বললে চলেনা, সেটি হল সমানাধিকার। "সমানাধিকার", এই কথাটি যতটাই বড়ো বর্তমানে তার মর্যাদা রক্ষা খুব কমই যেন দেখা যায়। সমানাধিকার বলতে সমাজে সকল মানুষের প্রতি সমান অধিকার, সকলকে সমানভাবে দেখা এবং সবাইকে সমান সুযোগ সুবিধাও দেওয়া। কিন্তু এর বিপরীত রুপই আমরা বেশি দেখতে পাই।
সমাজে যার অর্থ আছে তাকে ধনী আখ্যা দেওয়া হয় এবং সমাজের যার অর্থ নেই তাকে তথাকথিত গরিব এই আখ্যা দেওয়া হয়। কিন্তু এই আখ্যাগুলি না দিয়ে যদি সবাইকে একটা আখ্যা দেওয়া হয় যে সবাই হল " সমাজের মানুষ" তাহলে 'সমানাধিকার' প্রকৃত রুপ পাবে এবং তাতে সমাজে এরুপ বৈষম্যও থাকবেনা। কিন্তু চিরাচরিত এই বৈষম্যই সমাজে লক্ষ্য করা যায়, তাহলে আমরা কিভাবে বলবো যে সমাজে সমানাধিকার আছে।
আবার পুরুষ- নারী ভেদাভেদ এই দৃশ্য ত আমরা সর্বদাই দেখে চলেছি। বর্তমানে সমাজে নারীরা অনেকক্ষেত্রে এগিয়ে, থাকলেও আজও কিছু মানুষের মানসিকতা আজও পরিবর্তন হয়নি এবং আজও অনেকে ভাবে যে নারী মানেই "বিয়ে করে সন্তান প্রতিপালন করা"। কিন্তু তারা ভুলে যায় যে, নারীদেরও যে নিজেদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার একই সমানাধিকার আছে যা পুরুষদের আছে। অন্য দিকে নারীদের সুরক্ষার জন্য অনেক আইন আছে সেখানে পুরুষ সুরক্ষার তেমন আইন নেই। সেই জায়গায় লিঙ্গ নিরপেক্ষ আইন টা ও দরকার। শুধু তাই নয়, "কোটা" সিস্টেম যেটি প্রচলিত সেটির ফলেও অনেক যোগ্য মেধাবী ছেলে মেয়েরা সেসব সুযোগ পায়না, যা কোটা সিস্টেম মানে রিসার্ভেশানের আওতায় থাকা ছেলে মেয়েরা অনায়াসেই পেয়ে যায়। সুতরাং, একে কোনোভাবে কি আমরা "সমানাধিকার" বলতে পারি?
সমানাধিকারের প্রয়োজন রয়েছে। সমাজে ন্যায়বিচার, সুষ্ঠ জীবন চালাতে হলে সবার প্রথমেই এসব বৈষম্য দূর করে সমাজে "সমানাধিকার" প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।।
Check out for more news on https://www.facebook.com/AMPTvIndia
Subscribe for more stories https://www.youtube.com/c/AMPTvIndia
Comments