'হাম রহে ইয়া না রহে কাল, কাল ইয়াদ আয়েঙ্গে ইয়ে পল'… মাত্র ৫৪ বছর বয়সে মৃত্যু বলিউডের নামজাদা গায়ক কেকে-র।
জেনারেশনের পর জেনারেশন বুঁদ থেকেছে তাঁর গানে। গান ছিল তাঁর ধ্যান-গান, আর একপ্রকার গান গাইতে গাইতেই চলে গেলেন তিনি। কলকাতায় এসেছিলেন দুটি কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে, সেই অনুষ্ঠানই যেন কাল হল! মাত্র ৫৪ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন বলিউডের তারকা গায়ক কৃষ্ণকুমার কুনাথ, যাঁকে সকলে চেনে কেকে নামে।
সুরের শহর কলকাতা তাঁর শেষযাত্রার সাক্ষী হবে কে জানত? তাঁর অনুষ্ঠানের টিকিটের জন্য হাহাকার পড়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়, এইভাবে তাঁর নামের পাশে #RIP লিখতে হবে এমনটা কেউই ভাবেনি।
১৯৬৮ সালের ২৩শে অগস্ট দিল্লির এক মালায়ালি পরিবাপে জন্ম এই সংগীত শিল্পীর। কেরিয়ার শুরু করেছিলেন জিঙ্গল গায়ক হিসাবে। বলিউডে কেরিয়ার শুরুর আগে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বিজ্ঞাপনী জিঙ্গল গেয়েছিলেন তিনি।
নব্বইয়ের দশকে কেকে-র উত্থান শুরু বলিউডের মিউজিক আকাশে। ১৯৯৪ সালে মুম্বইয়ে গিয়ে গায়ক প্লে-ব্যাক গায়ক হওয়ার সফর শুরু। ইন্ডি-পপ মিউজিককে নতুন দিশা দেখিয়েছিলেন কেকে। বলিউডে তাঁর প্রথম ব্রেক সলমন-ঐশ্বর্যর ‘হাম দিল দে চুকে সনম’-এর ‘তড়প তড়প’। যদিও এর আগে ‘মাচিস’ ছবিতে ‘ছোড় আয়ে হাম’ গানটির কিছু অংশ গেয়েছেন তিনি। ভাঙা মনের যন্ত্রণা তাঁর মতো আর ক'জন ব্যক্ত করতে পারেন?
১৯৯৯ সালে মুক্তি পায় কেকে-র সোলো অ্যালবাম ‘পল’। ‘আপকি দুয়া’, ‘ইয়ারো’ থেকে টাইটেল ট্র্যাক ‘পল’- প্রত্যেকটি গান কালজয়ী।
নতুন শতাব্দীতে বলিউডকে, বলিউড মিউজিক লাভারদের একাধিক মন মাতানো গান উপহার দিয়েছেন তিনি। কিশোর কুমারের অন্ধ ভক্ত ছিলেন কেকে। হিন্দি ছাড়াও বাংলা, তামিল, তেলুগু, মালায়ালম, গুজরাতি-সহ একাধিক ভারতীয় ভাষায় গান গেয়েছেন তিনি। ভারতীয় পপ ও রক মিউজিকে আলাদা করে নিজের পরিচয় তৈরি করেছিলেন কেকে।
‘আঁখো মে তেরি’, ‘যারা সা’, ‘খুদা জানে’, ‘তুহি মেরি শব হ্যায়’,'দিল ইবাদত', ‘ক্যায়া মুছে প্যায়ার হ্যায়’-সহ অজস্র হিট গান দর্শকদের উপহার দিয়েছেন কেকে। ‘বাঁচনা ইয়ে হাসিনো’ ছবির ‘খুদা জানে’ গানের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পান কেকে। অজস্র ভক্তকে কাঁদিয়ে এদিন চলে গেলেন কেকে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬.৪৫ নাগাদ নজরুল মঞ্চে প্রবেশ করেন সংগীত শিল্পী। জনজোয়ারের মাঝে পারফর্মও করেন কেকে। অনুষ্ঠান চলাকালীন অস্বস্তিবোধ করছিলেন শিল্পী, দাবি উপস্থিত দর্শকদের। স্পটলাইট বন্ধ করতে বলছিলেন, ঘেমে যাচ্ছিলেন। তবে থামেনি তাঁর সুর। ৮.৪৫ নাগাদ শো শেষ করে বেরিয়ে যান তিনি। এরপর পৌঁছান গ্র্যান্ড হোটেলে, সেখানে মারাত্মক অসুস্থবোধ করেন, এরপর তাঁকে সিএমআরআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে গায়ককে মৃত বলে ঘোষণা করেন এমার্জেন্সি বিভাগের চিকিৎসকরা।
কেকের কলকাতা সফরের মধ্যেই সোমবার রূপঙ্কর বাগচীর গলায় পাওয়া গেছিলো কটাক্ষের সুর । সোমবার ফেসবুক লাইভে এসে বাংলার দর্শকের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন সঙ্গীত শিল্পী। সাথে সাথে তাঁর বিরুদ্ধে নেট মাধ্যমে ওঠে কটাক্ষের ঝড় । আজ কেকের মৃত্যুর পর সেই ঝড় আরো বেশি ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে নেট মাধ্যমে ।
Comments