top of page
For Newsletter
new logo.jpg

অলিম্পিকে ভারতের সোনা


দুর্দান্ত দুই থ্রোয়ে সোনার খরা কাটিয়ে দিলেন নীরজ চোপড়া। অলিম্পিক্সের ইতিহাসে প্রথম ভারতীয় হিসেবে ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের কোনও ইভেন্টে পদক জিতলেন। তা-ও একেবারে সোনা জিতে নিলেন তিনি। শনিবার ফাইনালে দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় ৮৭.৫৮ মিটার ছুড়ে পদক জিতলেন তিনি। এর আগে অ্যাথলেটিক্সে ভারত সোনা তো দূর, কোনও পদকই জেতেনি। সেই আক্ষেপ মিটিয়ে দিলেন নীরজ।

শনিবারের আগে পর্যন্ত অলিম্পিক্সে মাত্র ৯টি সোনা ছিল ভারতের। এর মধ্যে আটটি ছিল হকিতে। ব্যক্তিগত বিভাগে মাত্র একটি সোনা ২০০৮ বেজিং অলিম্পিক্সে শুটিংয়ে জিতেছিলেন অভিনব বিন্দ্রা। এর পর বার বার তিনি আক্ষেপ করেছেন ব্যক্তিগত বিভাগে কেউ সোনা না জেতায়। সেই স্থান পূরণ করলেন নীরজ। দ্বিতীয় ভারতীয় ক্রীড়াবিদ হিসেবে ব্যক্তিগত ইভেন্টে সোনা জিতলেন তিনি।শনিবার জ্যাভলিনের শুরু থেকেই দুর্দান্ত ছন্দে ছিলেন নীরজ। প্রথম প্রচেষ্টায় ৮৭.০৩ মিটার ছুড়ে বাকিদের থেকে অনেকটাই এগিয়ে যান। দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় দূরত্ব আরও বাড়িয়ে নেন তিনি। এ বার ছোড়েন ৮৭.৫৮ মিটার। হাত থেকে জ্যাভলিন বেরনো মাত্রই পিছনের গ্যালারির দিকে তাকিয়ে দু’হাত তুলে উল্লাস করতে থাকেন নীরজ। সেখানে বসেছিলেন তাঁর কোচ উয়ে হন এবং ভারতীয় দলের আধিকারিকরা।যে নীরজ দেশের হয়ে ইতিহাস তৈরি করে ফেললেন, তাঁর অ্যাথলেটিক্সে আসা নিতান্তই কাকতালীয় ভাবে। ছোট থেকে নীরজের এক এবং একমাত্র দুর্বলতা ছিল খাবার। যে কোনও খাবার দেখলেই হামলে পড়তেন তিনি। খাবারের প্রতি নীরজের এই টানে ইন্ধন দিতেন তাঁর ঠাকুমা। সুযোগ পেলেই নাতিকে চুরমা বানিয়ে খাওয়াতেন। ঠাকুমার প্রশ্রয় পেয়ে অতি অল্প বয়সেই নাদুস-নুদুস গোলগাল চেহারার হয়ে পড়েছিলেন নীরজ। ১২ বছরে তাঁর ওজন দাঁড়ায় ৯০ কেজির বেশি। ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছিলেন ওবেসিটির দিকে।বাধ্য হয়ে তাঁর ওজন কমানোর লক্ষ্যে বাবা-মা জোর করে মাঠে পাঠাতে থাকেন। হরিয়ানার পানিপথ জেলার খান্দরা গ্রামে জন্ম নীরজের। বাড়ির পাশেই শিবাজি স্টেডিয়ামে রোজ সকালে জগিং করতে যেতেন তিনি। সেখানেই পরিচয় হয় প্রাক্তন জ্যাভলিন থ্রোয়ার জয় চৌধুরির সঙ্গে।

জয়ের সঙ্গে দেখা হওয়ার আগে পর্যন্ত নীরজ জানতেনই না জ্যাভলিন কী জিনিস। একদিন খেলাচ্ছলেই তাঁকে জ্যাভলিন ছুড়তে বলেছিলেন জয়। প্রথম প্রচেষ্টাতেই প্রায় ৪০ মিটার দূরে ছুড়েছিলেন নীরজ। প্রথম বার দেখেই জয় বুঝেছিলেন নীরজের ওজন বেশি থাকলেও শরীরের নমনীয়তা রয়েছে।

এরপর থেকেই ধীরে ধীরে জ্যাভলিন নীরজের জীবনের একটা অঙ্গ হয়ে ওঠে। তাঁর ওজনও ক্রমশ কমতে থাকে। চণ্ডীগড়ের ডিএভি কলেজে পড়াকালীন নিজের খেলাধুলোকে শীর্ষস্তরে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন নীরজ। অংশগ্রহণ করতে শুরু করেন বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়।

১৩৫ কোটির দেশে প্রথম বার অ্যাথলেটিক্স থেকে পদক এল। প্রয়াত মিলখা সিংহ, পি টি ঊষা, অঞ্জু ববি জর্জ, বিকাশ গৌড়ার মতো ক্রীড়াবিদরা কাছে এসেও পদক জিততে পারেননি। সেই অভাব ঢেকে দিলেন নীরজ। তাঁকে এ বার জ্যাভলিনে পদক জেতার অন্যতম দাবিদার মনে করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর থেকে অনেক এগিয়ে থাকা ক্রীড়াবিদদের টপকে যে তিনি সোনা জিতবেন, এটা তাঁর অন্ধভক্তও ভাবতে পারেননি।

শনিবার তাই নিঃসন্দেহে ভারতীয় খেলাধুলোর ইতিহাসে তৈরি হল নতুন ইতিহাস।অলিম্পিক্সে অভিনব বিন্দ্রার সোনা জয়ের পর এ বার নীরজ চোপড়া দেশকে সোনা এনে দিলেন। ব্যক্তিগত বিভাগে অলিম্পিক্সে এটি ভারতের দ্বিতীয় সোনা।শ্যুটিংয়ে অভিনব বিন্দ্রা ভারতকে সোনা এনে দিয়েছিলেন। সেটিই ব্যক্তিগত স্তরে অলিম্পিক্সে এখনও পর্যন্ত ভারতের সেরা পারফরম্যান্স ছিল। এত দিন একাই ছিলেন বিন্দ্রা। এ বার তাঁর সাফল্যে ভাগ বসালেন নীরজ।


১২১ বছর পরে অলিম্পিক্সে অ্যাথলেটিক্সে তৃতীয় পদক এল ভারতে। প্রথম দুটি পদক যিনি জিতেছিলেন, সেই নর্ম্যান প্রিচার্ড ব্রিটিশ ভারতীয়। তাঁকে বাদ দিলে নীরজ চোপড়ার জ্যাভলিনে পদক জয় ভারতীয় হিসেবে অ্যাথলেটিক্সে প্রথম।


১৯০০ সালে প্রিচার্ড প্যারিস অলিম্পিক্সে অ্যাথলেটিক্সে দুটি পদক জিতেছিলেন। তাঁর দুটি পদকই রুপো। ২০০ মিটার এবং ২০০ মিটার হার্ডলসে রুপো জিতেছিলেন তিনি।ব্যক্তিগত বিভাগে প্রিচার্ড এবং নীরজকে বাদ দিলে মোট ১৮ জন ভারতীয় পদক জিতেছেন। কিন্তু অ্যাথলেটিক্সে কেউ পদক জিততে পারেননি।

Check out for more news on https://www.facebook.com/AMPTvNews

movie-entertainment-logo-vector-38310588.png
bottom of page